প্রতিক সম্বলিত লিফলেট হাতে প্রার্থীরা ছুটছেন রাত দিন। বিরামহীন ভাবে চলছে তাদের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা। প্রতিদিনই দফায় দফায় প্রার্থীদের পক্ষে চলছে ভোট প্রার্থনা। প্রার্থী নিজে কিংবা তার স্বপক্ষে লোকজন রাত দিন যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।তুলে ধরছেন নিজ পছন্দের প্রার্থীর যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা। কুশল বিনিময় আর সালাম আদাব জানিয়ে চাইছেন তাদের মূল্যবান ভোট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভোটারদের কাছে করছেন ভোটের আবেদন নিবেদন। প্রার্থীর পক্ষে প্রচরণায় মাঠে আছেন একাধীক টিম। ভোট চাওয়ার এ দলে পুরুষের পাশাপাশি বাদ পড়ছেন না নারীরাও। নিজেদের পক্ষে ভোট টানতে কাজে লাগানো হচ্ছে ভোটারদের আত্নীয় স্বজনকে। আত্নীয়তার সম্পর্কে তারা ভোট চাইছেন নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে। ভোট যুদ্ধে বিজয়ী হতে চালানো হচ্ছে না কৌশল। ইলেক্ট্ররাল কলেজ পদ্বতিতে ভোট হওয়ায় দেশে এবারই প্রথম জনপ্রতিনিধিদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। তাই সাধারণ ভোটারদের অংশগ্রহণ না থাকায় মাঠে ঘাঠে হাটে জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা অনান্য নির্বাচনের মত ততটা সরগরম নয়। তারপরও প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচারণায় অনেকটাই জমে উঠেছে নির্বাচনী আমেজ। আর হাতে মাত্র দুই দিন। ভোটের দিন ঘনিয়ে আসায় প্রার্থীদের প্রচারণার কাজে রাত দিন একাকার। কাটছে র্নিঘুম রাত। ফুরসদ নেই দিনেও। এখন প্রার্থীদের একটাই লক্ষ্য যে ভাবেই হউক ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে শেষ মুর্হুতে তাদের মনজয় করে মূল্যবান ভোট নিজেদের ভাগে আনা। ভোট যুদ্ধের বৈতরণী পার হতে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে চলছে নানা কলা কৌশল। দিচ্ছেন নানা উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি। তবে ভোটাররা জনপ্রতিনিধি হওয়ায় তারাও অধিক সচেতন। তারা সহজেই যেমন কাউকে দিচ্ছেন না ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি। তেমনি কোন প্রার্থীর পক্ষেও মুখও খোলছেন না সহজেই। নিজ দল বা নিকটজন না হলে প্রার্থীর পক্ষে মাঠে সরাসরি ভোট চাইতেও নামছেন তারা। ভোটের মাঠে প্রার্থীরা সরব হলেও ভোটাররা রয়েছেন নিরব। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ব্যাপক প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত থাকলেও বসে নেই সদস্য প্রার্থীরাও। চেয়ারম্যান প্রার্থীর তুলনায় সদস্য প্রার্থীদের নির্বাচনী এলাকার আয়তন ও ভোটার কম হলেও তাদের মত তারাও হরদম ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। প্রত্যাশা ভোটারদের মন জয় করে তাদের কাঙ্খিত রায় পাওয়ার। আসন্ন সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচনে গোলাপগঞ্জ উপজেলার আওয়াতাধিন দুটি ওয়ার্ডে ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার পুরুষ ভোটার ১০৮ ও মহিলা ভোটার ৩৭ জন। নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর, সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা মেম্বার সহ মোট ১৪৭জন জনপ্রতিনিধি তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। পুরুষ ভোটার ১০৮ ও মহিলা ভোটার ৩৭ জন।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার আওতাভুক্ত ১০নং ওয়ার্ডে বাঘা ইউনিয়ন আ’লীগ নেতা স্যায়িদ আহমদ সুয়েদ (ক্রিকেট ব্যাট) , বিএনপির ফুলবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এডভোকেট মামুন আহমদ রিপন(ঘুড়ি), পৌর বিএনপি নেতা হাসান এমাদ (উটপাখি) , আওয়ামীলীগের উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনুছুর আহমদ(হাতি), ফুলবাড়ী ইউনিয়ন আ’লীগ নেতা আব্দুল হানিফ খাঁন (বৈদ্যুতিক পাখা) ও আ’লীগের এডভোকেট নেমার আলী (টিউবওয়েল) , গোলাপগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাংবাদিক সৈয়দ জেলওয়ার হোসেন স্বপন (অটোরিকশা) ও আব্দুল হক বাবুল (তালা) প্রতিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
১১ নং ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিব (ঘুড়ি), কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ হাসিন আহমদ মিন্টু( বেহালা), ভাদেশ্বর ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি লুৎফুর রহমান (তালা), আ’লীগ সমর্থিত আব্দুল কাইয়ুম বিলু (বৈদ্যুতিক পাখা), মো:রফিক উদ্দিন (হাতি) , মাহমুদ আলী (ক্রিকেট ব্যাট) ও মাহমুদুর রহমান লায়েক (অটোরিকশা) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সংরক্ষিত আসনের মহিলা প্রার্থীরা হলেন, আ’লীগের উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শিলা(হরিণ), রোকেয়া আক্তার চৌধুরী (বই), তাহেরা বেগম, হাসিনা বেগম(ফুটবল),। তবে এ নির্বাচনে আওয়ামী-বিএনপি ছাড়া অন্য কোন দল বা সংগঠন যুক্ত হয়নি। ১০নং ওয়ার্ডে আওয়ামী প্রার্থী ৪ ও বিএনপি ২। ১১ নং ওয়ার্ডে আওয়ামী ৬ ও বিএনপির একক প্রার্থী।
এদিকে আগামী ২৮ ডিসেম্বর সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। আগেই জানানো হয়েছিল মোট ১৫টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। সম্প্রতি প্রতিটি কেন্দ্রের নাম এবং ওই কেন্দ্রভুক্ত এলাকা ঠিক করা হয়েছে।
১০নং ওয়ার্ডের কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে উপজেলা পরিষদের নিকটবর্তী কোয়ালিটি স্কুলকে। এ কেন্দ্রে ভোট দিবেন গেলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ, গোলাপগঞ্জ পৌরসভা ও বাঘা, গোলাপগঞ্জ, ফুলবাড়ী, লক্ষীপাশা, ঢাকা দক্ষিণ ও লক্ষাণাবন্দ ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা। ১১নং ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্র আল- এমদাদ উচ্চ বিদ্যালয় (চন্দরপুর) কে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ কেন্দ্রে ভোট দিবেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার বুধবারীবাজার, ভাদেশ্বর, পশ্চিম আমুড়া, শরীফগঞ্জ, উত্তর বাদেপাশা, বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার, মাথিউরা, ও তিলপাড়া ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা।
ভোটের সময় ঘনিয়ে আসায় জেলা জুড়ে নির্বাচনী আমেজ বইতে শুরু করেছে। কে কোন দল ও মতের, কার কি যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা, কার দ্বারা এ জেলাবাসীর উন্নয়ন হবে ইত্যাদি নানা বিষয় জেলার সুশিল সমাজ ও সচেতন মহলের আলোচনায় উঠে আসছে। মনোনয়ন জমাদান থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সুর্হাদ্যপূর্ণ পরিবেশে প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।